‘গণবিচারকতন্ত্রী বাংলাদেশ’ শিরোনামে একটি লেখা দিয়েছিলাম। লেখাটি অফলাইনে রাখা হয়েছে। এর আগেও আমার অনেক লেখা এভাবে অফলাইনে রাখা হয়েছে, প্রকাশ করা হয়নি। সম্ভবত এ ব্যাপারে আমিই মুক্তচিন্তা ব্লগের সবচেয়ে নিগৃহীত ব্লগার। আমার অসংখ্য লেখা প্রকাশ করা হয়নি। লেখকের লেখা প্রকাশ করা বা না করার ব্যাপারে অ্যাডমিনের কতটুকু অধিকার আছে সে বিষয়ে আমার কিছু বলার নাই, বলবও না। কারণ, যার সন্তান সে তার ইচ্ছেমত তাকে মারবে না কাটবে সেরকম একটি মালিকানার প্রশ্ন সেখানে চলে আসতে পারে। প্রকাশ না করলেও সেরকম একটি মালিকানার অনুভূতি অ্যাডমিন প্যানেল লালন করেন বলেই আমার ধারণা। আমি সমাজ পরিবর্তনের জন্য লেখা প্রকাশের ভূমিকার বিষয়ে অ্যাডমিন প্যানেলের দায়িত্ব ও নৈতিকতার প্রশ্নটিকে সামনে আনতে চাই।
ব্লগ ব্যতিক্রমী ও দ্রোহী লেখা প্রকাশের জন্যই পরিচিত। প্রচলিত প্রকাশনা যে লেখাগুলি প্রকাশ করতে পারে না সেরকম লেখা ব্লগ প্রচার করে। এটা শুধু সাহসের প্রশ্ন নয়, এটা ব্লগের বৈশিষ্ট্য। এটা ব্লগের একটি শক্তিশালী ভিত্তি ও অবস্থান। যায়গাটি শ্রদ্ধারও বটে। ব্লগ যদি দাড়ি-টুপিওয়ালা হুজুর, পৈতাবাহী ঠাকুর, আলখেল্লা পরা পাদ্রী বা প্রচলিত অ্যাডমিন ক্যাডার হয়ে যায় তাহলে সে তার বৈশিষ্ট্য থেকে সরে আসে। ব্লগের নৈতিক দিকটি সেখানে প্রশ্নবিদ্ধ হয়, ব্লগ পরিচালকবৃন্দের দায়িত্বজ্ঞানের বিষয়টি তখন সামনে চলে আসে। কথাগুলো হয়ত খুব শক্ত বলে ফেললাম। কেন বললাম সে বিষয়ে দুটি কথা বলেই এ লেখা শেষ করব, বেশি লিখতে ইচ্ছে করছে না।
আমার যতো লেখা মুক্তচিন্তাব্লগ তাদের বিবেচনা ও যুক্তিতে প্রকাশ-অযোগ্য মনে করে তা প্রকাশ করেনি তারমধ্যে একটি বা দুটি লেখা বাদে সমস্ত লেখাই প্রচলিত প্রকাশনায় প্রকাশিত লেখা। সেখানে প্রকাশের পরে আমি এখানে লিখেছি। অন্যান্য ব্লগেও সে লেখাগুলি প্রকাশিত হয়েছে। এ কথাগুলিও আমি তখন বার বার বলেছি, তারপরেও লেখা প্রকাশিত হয়নি। কিছু কিছু লেখা প্রকাশিত হলেও আমাকে তা এডিট করে দিতে হয়েছে। পত্রিকায় প্রকাশিত লেখা, প্রকাশিত গ্রন্থ থেকে অংশবিশেষ প্রকাশ করার ক্ষেত্রেও এমন ঘটনা ঘটেছে।
প্রচলিত প্রকাশনা থেকে লেখা প্রকাশ করতে হলে মনের মধ্যে অনেকটা নতি রেখেই লেখা লিখতে হয় এবং প্রকাশ করতে হয়। কারণ, তারা ঠাকুর। ঠাকুরের পূজো করে তাকে সন্তুষ্ট রেখেই লেখা প্রকাশযোগ্য করতে হয়। তো সেই ঠাকুরের পূজোয় উত্তীর্ণ হয়ে লেখা প্রকাশিত হবার পরেও মুক্তচিন্তা ব্লগের ঠাকুর সে লেখা আটকে দেয়। বিষয়টি ভাবনার বটে। হয়ত এখানের ঠাকুরগণ ঠাকুর কুলের শিরোমণি বলেই। ঠাকুরবৃন্দের প্রতি শ্রদ্ধা রইল।
‘গণবিচারকতন্ত্রী বাংলাদেশ’ লেখাটিও ফেসবুকে এবং পত্রিকায় প্রকাশিত লেখা। পত্রিকায় শিরোনামটি শুধু ভিন্ন ছিল। লেখাটি ব্লগ প্রকাশ করতে পারল না। ‘গণকবিতাতন্ত্রী বাংলাদেশ’ নামে একটি কাব্যগ্রন্থ আছে। সে থেকেই শিরোনামটির ধারণা পাওয়া।
ধন্যবাদ।