ভারতের সিভিল সোসাইটির অগ্রসরমান অংশ বেশ ভন্ড। সিপিআইএম ও কংগ্রেসের নকশাল নিরোধী গণহত্যা, মরিচঝাঁপিতে বাঙালী গণহত্যা, কাশ্মীরে ধর্মের আবরণে পন্ডিতদের গণহত্যা, পাঞ্জাবে চলা বছরের পর বছর স্টিম রোলার নিয়ে এরা টু শব্দও করে না।
দুনিয়ার নিয়ম হলো ক্ষমতা হাতে থাকলে গোষ্ঠীগত বিরোধে রক্ত ঝড়বে, গুরুত্বপুর্ণ হলো শুরুটা কে করেছে। ৭১ এ পাকিস্তান করেছে আমাদের উপর, উপরে বলা যায়গাতে কোথাও সিপিআইএম, কংগ্রেস বা হালের তৃণমুল। ভারতের নির্যাতিতরা আমাদের মতো ভুরাজনৈতিক অবস্থানে না থাকবার দরুণ ও একজন মুজিবের অভাবে পাল্টা আঘাতে যায়নি তবে বসেও থাকেনি। যার ফলাফল আজকের বিজেপি। পৃথিবীর তাবৎ ধর্মীয় মৌলবাদের সাথে বিজেপির মৌলবাদ আলাদা। লক্ষ্য করলে দেখবেন এরা স্পিরিচুয়াল চর্চাও করে বেশ ঢাকঢোল পিটিয়ে, সেটা কি? মোদীর যোগ দেখেছেন!
এরা অন্যান্ন শক্তির মতো শুধু বলপ্রয়োগে যায় না, সুপ্রেমিসিও দাবী করেনা এবং একই সাথে প্রথাও মানেনা অনেক ক্ষেত্রে। বিজেপিতে তাই আপনি প্রচুর নেতা পাবেন আঞ্চলিক ক্ষেত্রে যারা হিন্দু না। প্রথমেই বলা সিভিল সোসাইটি তার ভন্ডামীর কারণে আজ আর বিজেপিকে আটকাতে পারছে না। বিজেপির যখন যেখানে যেমন নিতীর ফলে পুর্বের কর্মের কারণে বাকীরা পিছু হটছে। বিজেপি চাদে মানুষ পাঠানোর প্রকল্প শুরু করবার নির্দেশ দিয়ে আবার একই বৈঠকে গরুর মুত্রের উপকারীতা নিয়েও বিরাট বয়ান দিতে পারে। এই ভার্সেটাইল চরিত্রের ধর্ম আশ্রয়ী দলটি তাই অপ্রতিরোধ্য ও উচ্চাভিলাসী।
ভারতের সিভিল সোসাইটির মতোই আমাদের সিভিল সোসাইটি আজ ভন্ডামীর চূড়ান্ত পর্যায়ে আছে। এখানেও রাজনৈতিক মেরুকরণ আজ প্রকট। সংখ্যার বিচারে ধর্মীয় ও জাতিগত পীড়ন নিত্য ঘটনা। শাসক শ্রেণীর চরিত্রও ভার্সেটাইল। পাঠ্য বই থেকে লেখকের রচনা ধর্মীয় কারনে নাই করে দেওয়া হয় আবার একই সাথে পুরস্কৃত করা হয় যারা ঘোষণা দিয়ে শাসক শ্রেণীকে চ্যালেঞ্জ করেছিলো তাদের।
বাঙালীর মহান নেতা শেখ মুজিব খুব বেশী বলেননি কিন্তু যতটুকুই বলে যেতে পেরেছেন তা আজ কেউ মনে রাখেনা। মৌলবাদের ছায়া থেকে মুক্তি পেতে আপনাকে কস্ট করে বিদেশী মানবতার ছবক শিখবার আসলে প্রয়োজন নাই, ওসব যারা চর্চা করে এদেশে ওরাও বিজেপি থেকে কম না, ভারতে সেটা ওরা করেও দেখিয়েছে। আবার আপনাকে শাসক গোষ্ঠির পদলেহন করতে হবে তাও না, কারণ আপনি ঐ মানবিক বোধ ধারন করতে পারলে সেটা আপনি এমনিতেই পারবেন না। না পারলে আফসোস করুন যে আপনি পারছেন না। ঠেকে গ্যালে রবীন্দ্র, নজরুল, জীবনানন্দ, তারা শংকর আছে আমাদের, সেখানে আশ্রয় নিন। মতবাদের দাস ও মৌলবাদের গুটি হইলে অন্যদের ফ্যাসিবাদী, সাম্প্রদায়ীক বলতে বলতে আপনার নিজেরই একদিন দেখবেন সাম্প্রদায়ীক, মৌলবাদী দাঁত গজিয়ে যাবে যা ঘৃণা ও রক্তের চাষাবাদ ছাড়া অন্যকিছুতে তৃপ্তি পাবে না।