নিম্নশ্রেণীর মুসলমানদের সীমাহীন ঔদ্ধত্য, আস্ফালন ও নাশকতা
সাইয়িদ রফিকুল হক
বাংলাদেশের নিম্নশ্রেণীর মুসলমান যে কতবড় জঘন্য শয়তান আর হিংস্র শুয়োর হতে পারে তার প্রমাণ মিললো ভোলার বোরহানউদ্দিনে। একজন হিন্দু-যুবক ‘বিপ্লব চন্দ্র শুভ’র ফেসবুক-আইডি ‘হ্যাক’ করে তাতে মহানবী সা.-এর নামে অপপ্রচার ও তাঁকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেছে মুসলমান। আর তা একজন হিন্দুর আইডি দখল (হ্যাক) করে প্রচার করেছে! হিন্দুর আইডি দখল করে এসব করার উদ্দেশ্যে হলো: দেশের ভিতরে একটা সাম্প্রদায়িক-সংঘর্ষসৃষ্টি করা। কতবড় শয়তান হলে এমনটি করা সম্ভব। একশ্রেণীর মুসলমান নামক নরপশু সত্য-ঘটনা না জেনেই হিন্দুর বিরুদ্ধে জিহাদে নেমে গেল! ভোলার পুলিশ সুপার সাহেব বলেছেন, বিপ্লব নির্দোষ। তার আইডি ‘হ্যাক’ করা হয়েছে। আর বিপ্লব নির্দোষ বলেই তার আইডি থেকে যখনই এসব ধর্মীয় উস্কানিমূলক প্রচারণা চালানো হচ্ছিলো তখনই সে থানায় এসে তা অকপটে জানিয়েছে। এতেই প্রমাণিত হয় সে নিরপরাধ ও সম্পূর্ণ নির্দোষ। তাছাড়া, সে যখন থানায় একপ্রকার বন্দি তখনও তার ফেসবুক-আইডি অন্য কেউ ব্যবহার করছিল। আর কোনো প্রমাণ লাগে? তবুও একশ্রেণীর মুসলমান নামক নরপশু দেশের আইনশৃঙ্খলার প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলিপ্রদর্শন করে রাস্তায় নেমে রাষ্ট্রবিরোধী অপতৎপরতার অপচেষ্টা করেছে! পুলিশ সাধারণ মানুষের জানমালসহ নিজেদের প্রাণ রক্ষার্থে এই হিংস্র পশুদের ওপর সামান্য গুলি চালাতে বাধ্য হয়েছে। এই ঘটনাকেও পুঁজি করে একশ্রেণীর নিম্নস্তরের মুসলমান এখন অনলাইনে নানাবিধ অপপ্রচার চালাচ্ছে।
বিপ্লবের আইডি যারা ‘হ্যাক’ করেছে তাদের নাম হলো: মো. শরীফ ও মো. ইমন। এরা হিন্দু না মুসলমান? এবার বলুন তো—মহানবী সা.-কে বা কারা গালিগালাজ করেছে? আর সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো ধৃত মো. শরীফ ও মো. ইমন নামক দুইটি পশুই ইসলামীছাত্রশিবিরের কর্মী। কী বুঝলেন? নাকি এখনও বুঝিয়ে বলতে হবে? এই দেশের নিম্নশ্রেণীর মুসলমানগুলো দিন-রাত শুধু হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টানদের দোষ খুঁজে বেড়ায়। এছাড়া, এই পশুদের আর-কোনো চিন্তাভাবনা নাই। এই পশুদের কবে বোধোদয় হবে? আর এই পশুরা কবে মুসলমান থেকে একটু মানুষ হবে?
মহানবী হজরত মোহাম্মদ সা.-কে কটূক্তি করার মিথ্যাঅভিযোগের ভিত্তিতে রাস্তায় নেমেছিল একদল নরপশু। এরা নাকি মুসলমান! এই নরপশুরা রাস্তায় নেমে ব্যাপক সহিংসতা ও নাশকতার সৃষ্টি করেছে। এদের আচার-আচরণ দেখে একবারও মনে হয়নি যে, এরা একটু মানুষ। তবে এদের শুধু নিম্নশ্রেণীর মুসলমানই মনে হয়েছে। এই নিম্নশ্রেণীর মুসলমানসমাজ হিতাহিতজ্ঞানশূন্য হয়ে মহানবীকে অবমাননার মিথ্যাঅভিযোগের ভিত্তিতে রাস্তায় নেমে ভয়াবহ সন্ত্রাসসৃষ্টির পাশাপাশি স্থানীয় মসজিদ, মাদ্রাসা ও কুরআন শরীফ রাখার রুম ভয়ংকরভাবে ভাংচুর করেছে। এগুলোও কি হিন্দুরা করেছে? যারা প্রকাশ্য-দিবালোকে এভাবে মসজিদ, মাদ্রাসা ও কুরআন রাখার স্থান ভেঙে চুরমার করতে পারে তারা সব করতে পারে। এরাই হিন্দুধর্মের লোকদের ফাঁসানোর জন্য এরকম ষড়যন্ত্র করেছে ও করছে। আন্দোলনের নামে এই পশুরা পুলিশের একজন ডিআইজিসহ অন্যান্য উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অনেককে হত্যার পরিকল্পনা করেছিল। সেদিন সঠিক সময়ে পুলিশ যদি প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থাগ্রহণ না করতো—তাহলে, দেশের ভিতরে বড় ধরনের একটা নাশকতার সৃষ্টি হতো। আপনাদের মনে আছে: ২০১৩ সালে, একাত্তরের যুদ্ধাপরাধী, নরঘাতক ও শয়তানপুত্র দেলোয়ার হোসেন সাঈদী ওরফে দেইল্যা রাজাকারের ফাঁসি ঠেকানোর জন্য ‘জামায়াত-শিবিরে’র নরপশুরা একটা মধ্যরাতে ঘোষণা দিলো: সাঈদীকে চাঁদে দেখা গেছে! সাঈদীর ফাঁসি ঠেকানোর নামে একটা অপআন্দোলনে দেশের ৬৭ জন নিরীহ মানুষের জীবন গিয়েছে। তবুও এই পশুদের একটু বোধোদয় হয়নি। এবারও তারা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মতো বড়সড় নাশকতার পরিকল্পনা করেছিল। আর সমস্ত শয়তানী-পরিকল্পনায় ছিল জামায়াত-শিবিরের এজেন্টরা। আমাদের মনে রাখতে হবে: এই দেশে জামায়াত-শিবির, চোরমোনাই, হেফাজতে শয়তান, কওমীমাদ্রাসা, আলিয়ামাদ্রাসা, ওহাবী, শর্ষিণা ইত্যাদির মধ্যে কোনো পার্থক্য নাই। সবই ধর্মভিত্তিক শয়তানের দল। এদের কাজই হলো নাশকতাসৃষ্টি। এরা নিম্নস্তরের জাহেল মুসলমান। এদের জন্মই হয়েছে দেশের ভিতরে সবসময় ধর্মের জিগির তুলে একটা অস্থিতিশীল পরিবেশসৃষ্টি করা।
এই নরপশুদের দলে কখনো কোনো ভালোমানুষকে দেখিনি। দেখেছি শুধু সাম্প্রদায়িক ও সংকীর্ণমনা নরপশুদের। এদের সামান্য একটা পরিচয়—এরা মুসলমান! এরা আজও মানুষ হয়নি। কোনোদিন যে এরা মানুষ হবে—তারও কোনো সম্ভাবনা নাই।
বাংলাদেশের এই নিম্নশ্রেণীর মুসলমান ভয়াবহ সাম্প্রদায়িক ও রাষ্ট্রবিরোধী অপশক্তি। এদের মধ্যে সামান্যতম হিতাহিতজ্ঞান, সততা, মনুষ্যত্ব ও মানবতাবোধ নাই। এরা শুধুই মুসলমান-নামধারী নরপশু। বাংলাদেশে সাম্প্রতিককালে এই নিম্নশ্রেণীর মুসলমানদের সীমাহীন ঔদ্ধত্য, আস্ফালন ও নাশকতাসৃষ্টির অপতৎপরতা খুব বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশ, জাতি, মানুষ ও মানবতার স্বার্থে এদের কঠোরহস্তে দমন করা রাষ্ট্রের প্রধান কর্তব্য।
সাইয়িদ রফিকুল হক
মিরপুর, ঢাকা, বাংলাদেশ।
২১/১০/২০১৯