ব্যাকগ্রাউন্ড

ফেইসবুকে!

মুসা সাদিকের ভাষ্যে বঙ্গবন্ধুর খুনীদের বিরুদ্ধে বঙ্গভবন ও ঢাকা ক্যান্টনমেন্টের অফিসারদের প্রতিরোধ (অজানা কথা) -এক

[লেখাটি আমার না।পুরটাই বিখ্যাৎ বাংলাদেশ উইস ফ্রিডমের রচয়িতা,মুক্তিযোদ্ধা মুসা সাদিকের লেখা।আমি শুধু তুলে দিলাম।মুসা সাদিক মুক্তিযুদ্ধে মুজিবনগর সরকারের যুদ্ধো প্রতিনিধি হয়ে রনাঙ্গনে গিয়ে সংবাদ সংগ্রহ করতেন।পরবর্তীতে তিনি সচিব ছিলেন।বর্তমানে বিভিন্ন পত্রিকায় কলাম লিখে থাকেন।]

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর খুনীরা তড়িঘড়ি করে খন্দকার মোশতাককে প্রেসিডেন্ট হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে দেশবাসী ও বিশ্ববাসীর সামনে প্রতিষ্ঠিত করার উদ্যোগ নেয়। সেনাবাহিনী, রক্ষী বাহিনী ও দেশবাসীর সামনে তারা দেখাতে চায় যে, বঙ্গবন্ধু জীবিত নেই বলে বাংলাদেশে কোন ক্ষমতার বা প্রশাসনিক কর্মকাণ্ডের শূন্যতা সৃষ্টি হয়নি। ১৫ আগস্ট বিকেলে বঙ্গভবনে খুনী খন্দকার মোশতাকের শপথ অনুষ্ঠানের তোড়জোড় শুরু করেন রাষ্ট্রপতির সচিব আব্দুর রহিম এবং স্বঘোষিত মুখ্য সচিব মাহবুব-উল-আলম চাষী (সিআইএ'র চর বলে প্রমাণিত হওয়ায় পাকিস্তান আমলে চাকরিচ্যুত) এবং তাদের আদেশে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খুনী মোশতাকের শপথ অনুষ্ঠানের ভাব-গাম্ভীর্য বৃদ্ধির জন্য খুনী মোশতাক-ডালিম-ফারুকদের সঙ্গে ঘন ঘন বৈঠক হয়।

বঙ্গভবনে খুনীদের একদিন পার হলো। ১৬ আগস্ট সন্ধ্যায় প্রেসিডেন্টের ফটোগ্রাফার আমির খসরুর কাছ থেকে খবর পেয়ে আমি ও কুমার শংকর হাজরা (খুনী মোশতাকের অফিসার) দোতলায় গেলাম খুনীদের মাতলামি করার ঘটনা দেখতে। আমরা দু'জন দোতলায় লিফটের দরজা খুলতেই দেখলাম লিফট থেকে ১০-১২ হাত দূরে বঙ্গবন্ধুর এক খুনী রিসালদার মহিউদ্দিনের এক হাতে মদের বোতল, আরেক হাতে আগ্নেয়াস্ত্র। রাতে জানলাম আর্মি চীফ জেনারেল শফিউল্লাহ বঙ্গভবনে বন্দী। রাত ১১টার পরে খুনীদের দুটি মাইক্রোবাসে সুন্দরী মহিলারা এসে বঙ্গভবনে নামল। তাদের দোতলায় কিলারদের কক্ষের দিকে নিয়ে যাওয়া হলো। বলা হলো কিলারদের স্ত্রীরা এসেছেন। অনেকে বিশ্বাস করতে পারল না।

১৭ আগস্ট সকাল ৯/১০টার দিকে বঙ্গভবন থেকে ফোন করে ঢাকার পত্রিকার সম্পাদকদের বঙ্গভবনে আসার ফরমান জারি হলো। ঢাকার সম্পাদকরা প্রবীণতম সম্পাদক জনাব ওবায়দুল হক সাহেবের নেতৃত্বে ১০-১২ জন সম্পাদক এলেন বঙ্গভবনে। বঙ্গভবনের গেট পেরিয়ে আসার পর বঙ্গভবনের সিঁড়িতে তাঁদের আটকে আধা ঘণ্টারও বেশি সময় দাঁড় করিয়ে রাখল অস্ত্রধারীরা। আমরা তাদের সেখান থেকে আনার জন্য গেলাম। কিন্তু অস্ত্রধারী খুনীরা হাতের ইশারায় আমাদের দূরে দাঁড়িয়ে থাকতে বলল। বাংলাদেশ অবজারভারের সম্পাদক জনাব ওবায়দুল হক সবার পক্ষ থেকে অস্ত্রধারীদের বললেন, বঙ্গভবনের বৈঠকের জন্য তাঁদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তাঁদের যদি ভেতরে যেতে না দেয়া হয়, তবে তাঁরা চলে যাবেন। এ কথা বলামাত্র মাথায় খুন চেপে থাকা বঙ্গভবনের অস্ত্রধারী খুনীরা তাদের দিকে হিংস্রভাবে তেড়ে এসে তাদের মাথার ও বুকের ওপর আগ্নেয়াস্ত্র তাক করে চিৎকার করে বলে উঠল : “Shut up, shut up you bustards, if you say a word, you are dead, all of you are dead. সম্পাদকরা সেই রক্ত পিপাসু খুনীদের আগ্নেয়াস্ত্রের মুখে ভয়ে আতঙ্কে ঠক ঠক করে কাঁপতে কাঁপতে সিঁড়ির ওপর পড়ে যান। কেউ কেউ কাঁপতে কাঁপতে সিঁড়ির ওপর বসে পড়েন। দেশের গুণী সম্পাদকরা নিজেদের আত্মসম্মান বাঁচাতে বঙ্গভবনে খুনীদের হাতে তাঁদের লাঞ্ছিত হবার ও নিগৃহীত হবার ঘটনা সেদিন জনসম্মুখে প্রকাশ করেননি!! (গত ২০ জুলাই, ২০০৩ হোটেল শেরাটনে দৈনিক ভোরের কাগজের যুগপূর্তি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির আসন অলঙ্কৃত করেন দেশের প্রবীণতম সম্পাদক ৯৮ বছরের বর্ষীয়ান এই বিবেকের কণ্ঠস্বর জনাব ওবায়দুল হক।) অনুষ্ঠান শেষে আমি তাঁকে জানালাম যে, ''৭৫-এর ১৭ আগস্ট বঙ্গভবনে খুনীরা সম্পাদকদের বুকের ওপর যে আগ্নেয়াস্ত্র ধরেছিল, সেটা আমি বহুবার ১৫ আগস্টের পত্র-পত্রিকায় লিখেছি।' তিনি আমার হাত জড়িয়ে ধরে টেনে নিয়ে তাঁর পাশে বসালেন। তখন সেখানে বুদ্ধিজীবী অধ্যাপক মমতাজউদদীন সাহেবও তাঁর আরেক পাশে ছিলেন। তিনি তাঁর পাশে বসিয়ে আমাকে বললেন, "মুসা সাদিক, আপনি 'খুনীদের মাথার মুকুট' শিরোনামে দৈনিক জনকণ্ঠে যেটা লিখেছেন, সেটা লেখার সাহস এদেশে আর কেউ দেখাতে পারেনি। সেজন্য আপনাকে আমি ধন্যবাদ দেই। আপনার অসীম সাহস। '৭১-এর মুক্তিযোদ্ধাদের সাহসটা আপনাকে দেখলে চেনা যায়। আমি দোয়া করি, আল্লাহতায়ালা যেন আমার চেয়েও আপনার আয়ু বেশি দেন।" তারপর আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, "আচ্ছা জিয়ার সময় আইএসপিআরের ডিরেক্টর কে ছিল যেন? ওর নাম কি যেন? ওর নামটা কি ছিল? দেখুন না, বয়স হয়েছে, এখন আর কিছু মনে করতে পারি নে!" আমারও তখন নামটা মনে পড়ছিল না। তিনি নামটি মনে করার জন্য অনেকক্ষণ চেষ্টার পর বললেন, "হ্যাঁ, হ্যাঁ, মনে পড়েছে, জাহিদ। আপনার লেখায় জাহিদের একটা কথা লিখে দেবেন যে, জিয়ার সময় জাহিদ ১৯৮১ সালে একদিন অবজারভার অফিসে আমার সঙ্গে দেখা করতে আসে। এসে সে বলে যে, "ক'দিন আগের ক্যু’য়ের জন্য আর্মির দু'হাজার অফিসার ও র্যাঙ্কার্সদের (জওয়ানদের) মৃত্যুদণ্ডের একটি ফাইলে প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান আজ সই করে দিলেন। ফাইল স্বাক্ষরের সময় আমি সেখানে ছিলাম। জানেন, এই ফাইল স্বাক্ষরের সময় তার মধ্যে আমি কোন ভাবান্তর দেখলাম না।" জাহিদ আমাকে আরও বলল, "তার বিরুদ্ধে এটা নিয়ে ১৮-১৯টা ক্যু হয়েছে।" প্রত্যেক ক্যু’তে হাজার হাজার আর্মি অফিসার ও জওয়ানের মৃত্যুদণ্ড হলে জিয়া কত হাজার জওয়ান ও অফিসারের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে ঠাণ্ড মাথায়, নিজের গদির জন্য, ভেবে দেখুন ...।" (২০০৩ সালের আগস্ট মাসে এ তথ্যসহ আমার এ আর্টিকেল অবজারভার পত্রিকাসহ দেশের অন্যান্য বাংলা ও ইংরেজী পত্রিকায় ছাপা হয় শ্রদ্ধেয় ওবায়দুল হক সাহেব বেঁচে থাকতে।)
বঙ্গভবনে খুনীদের ২য় দিন পার হলো ঘন ঘন মিটিং করে এবং হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের থেকে আনা গাড়ি গাড়ি মদের বোতল ও হোটেল পূর্বাণীর রাশি রাশি অন্ন ধ্বংস করে। (খুনীরা আগ্নেয়াস্ত্রের মুখে ইন্টারকন্টিনেন্টাল থেকে গাড়ি ভর্তি করে মদ এনে বঙ্গভবনের দোতলায় বোঝাই করে ফেলে। এসব মদের কোন টাকা পরিশোধ করেনি খুনীরা। হোটেল পূর্বাণীর খাবারের কোন টাকা দেয়নি তারা। উক্ত দুই হোটেল থেকে মদ ও খাবার অস্ত্রের মুখে হাইজ্যাক করে আনত তারা।) বঙ্গভবনের দোতলায় অতিথিদের থাকার রুমের সবগুলোতেই খুনীরা থাকতে শুরু করে। সেখানে বঙ্গবন্ধুর খুনীরা ১৮ আগস্ট সোমবার রাতে হঠাৎ কয়েক রাউন্ড ফায়ার করে বসলে সমগ্র বঙ্গভবনে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। প্রেসিডেন্টের পিএস-২ জনাব আব্দুল মান্নান (আমরা উভয়ে পশ্চিমবঙ্গের হিসেবে আমার সঙ্গে তার আস্থাপূর্ণ সম্পর্ক ছিল এবং আমরা পারস্পরিক বিশ্বাসভাজন ছিলাম) পরদিন সকালে আমাকে বললেন : "কাল রাত ৯টার দিকে দোতলায় খুনীদের মধ্যে মাতলামো শুরু হয়। তারা আকাশে কয়েক রাউন্ড গুলি ছুঁড়ে চিৎকার করে বলতে থাকে, "মীরজাফর শেখ মুজিব শেষ, বাংলাদেশ শেষ। কোন কুত্তাকা বাচ্চা শেখ মুজিবের বাচ্চার নাম লিয়া তো উয়ো বাস্টার্ড কো খতম কর দেংগে। উয়ো বাঙালী বাচ্চাকে হাম খতম কর দেংগে। বাংলাদেশ মর গিয়া। ইসলামী দেশ হো গিয়া ....। কোইয়ি, কাহা, কোন শালা মাদার...হঁযায়, হাম লোগোকে রোখেংগে। মুজিব কা বাচ্চা কোইয়ি, কাহা হঁযায় ...।" মদ খেয়ে মাতাল হয়ে অটোমেটিক মেশিন গান হাতে উর্দুতে খিস্তিখেউড় করে বঙ্গবন্ধুকে ও বাঙালী জাতিকে তারা গালাগাল দিচ্ছিল। বঙ্গভবনের সব সিভিল অফিসার ও স্টাফরা ভয়ে দূরে দূরে গিয়ে পিলার আড়াল করে তাদের এসব উর্দু অশ্রাব্য গালাগাল শুনছিল। মুক্তিযুদ্ধের সময় টিক্কা-নিয়াজীরা বঙ্গভবনে বসে বাঙালী জাতির মা-বোন তুলে যেভাবে অশ্রাব্য গালাগাল করত সেভাবেই তারা আমাদের মা-বোনের জাত তুলে পাক সেনাদের কণ্ঠস্বরে গালাগাল করছিল।"

বঙ্গভবনে তৃতীয় দিন পার হলো খুনী মোশতাকের কেবিনেট মিটিং করে। ওই মিটিংয়ে সিদ্ধানত্ম হয় যে, শেখ মুজিবের অর্থ ও ধন-সম্পদের বিবরণী রেডিও-টিভি এবং পত্রিকায় প্রকাশ করা হবে। বিকেলে সব ব্যাংকের এমডিকে বঙ্গভবনে ডাকা হলো।

কর্নেল রশিদ নিজে দরবার হলে তাঁদের সবাইকে ১৫-২০ জওয়ানের স্টেনগান এবং এসএলআরের সামনে দাঁড় করিয়ে বলল : "মীরজাফর শেখ মুজিবের কোন ব্যাংকে কত টাকা আছে, আপনারা তার বিবরণী নিয়ে এসেছেন?" সব এমডি বললেন যে, তাদের কারও ব্যাংকে ওঁনার কোন একাউন্ট বা টাকা-পয়সা নেই। সোনালী ব্যাংকের এমডি বললেন যে, সোনালী ব্যাংক, ধানমণ্ডি শাখায় ওঁনার ৩৩০০/- (তিন হাজার তিন শ') টাকা আছে। তখন কর্নেল রশিদ স্টেনগান এবং এসএলআর তাক করে রাখা সৈনিকদের চিৎকার করে বললেন : They are bustard, dogs of Sheikh Mujib, fire them (তারা সব জারজ, শেখ মুজিবের কুত্তা, তাদের গুলি করে মেরে ফেলো।) এ কথা শোনা মাত্র এক ব্যাংকের জনৈক এমডি অজ্ঞান হয়ে বঙ্গভবনের দরবার হলের মেঝেতে ধপাস করে পড়ে গেলেন। ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে তখন আরেক ব্যাংকের এমডি বলে উঠলেন : "স্যার, স্যার, মারবেন না। স্যার, আমার ব্যাংকে একটা আছে?" কর্নেল রশিদ তার কাছে এগিয়ে গিয়ে টাইসহ তার কোটের কলার চেপে ধরে হুঙ্কার দিল, You bustard, now open your mouth. (তুমি জারজ, এখন তোমার মুখ খোল।) তিনি বললেন : "স্যার, আমি হাউস বিল্ডিং ফাইন্যান্স কর্পোরেশনের এমডি। হাউস বিল্ডিং থেকে উনি (ভয়ে আতঙ্কে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামটাও উচ্চারণে অপারগ) ৩২ নম্বরের বাড়ি করার জন্য লোন নিয়েছিলেন। সে লোন পরিশোধ করেননি এবং সুদে আসলে তা এখন ৫-৬ লাখ টাকা হবে। এই টাকা ওঁনার কাছে সরকারের পাওনা আছে।" খুনী রশীদ হুকুম দিল : "বাড়ি এক্ষুনি জব্দ করে নিন।" এমডি সাহেব বললেন : "স্যার, নিউজ পেপারে একটা নোটিস দিয়ে দিতে হবে।" খুনী রশিদ বলল : "এক্ষুনি দিয়ে দিন। পত্রিকার লোক কে আছে এখানে?" সবার আগে সেই মার্শাল'লর ধামাধরা ইবলিশ কুদ্দুস ছুটে এল। সে তৎক্ষণাৎ ড্রাফট করে দিল "মৃত শেখ লুৎফর রহমানের পুত্র মৃত শেখ মুজিবুর রহমানের ধানমণ্ডির ৩২ নম্বর বাড়ির ঋণ বাবদ হাউস বিল্ডিং ফাইন্যান্স কর্পোরেশনের কাছে সুদে আসলে ৫-৬ লাখ টাকা ... বছর যাবত অপরিশোধ্য থাকার প্রেক্ষিতে উক্ত বাড়ি আগামী ৪৫ দিনের পরদিন প্রথম কার্যদিবসে হাউস বিল্ডিং ফাইন্যান্স কর্পোরেশন কর্তৃক প্রকাশ্যে নিলামে তোলা হবে। আগ্রহী ক্রেতাগণ ... তারিখে উক্ত বাড়ির সম্মুখে ডাকা প্রকাশ্য নিলামে অংশ গ্রহণ করতে পারেন। নিলামে সর্বোচ্চ দর ডাকার কাছে বাড়িটি বিক্রি করা হবে। খুনী মোশতাকের আরেক ডান হাত খ্যাত তাহের উদ্দীন ঠাকুরের নির্দেশে সেখানে উপস্থিত মর্নিং নিউজের সম্পাদক জনাব শামসুল হুদার হাতে এই নিলামের নোটিস এইচবিএফসির এমডি স্বাক্ষর করে দিয়ে দিলেন। ১ দিন পর ১৯ আগস্ট অথবা ২০ আগস্ট দৈনিক মর্নিং নিউজের পেছনের পাতায় বঙ্গবন্ধুর ৩২ নম্বর বাড়ির নিলামের বিজ্ঞপ্তি ছাপা হয়। এই হলো খুনী মোশতাক-রশিদ-ডালিম-ফারুক চক্রের জিঘাংসার শিকার বাংলার মুকুটহীন সম্রাটের অর্থ-বিত্ত ও ধন-সম্পদের সরকারীভাবে প্রকাশিত তথ্য বিবরণী।

১৯৭৫-এর ১৭ আগস্ট কয়েকজন ডিসিকে বঙ্গভবনে ডাকা হলো। সে বিষয়ে আমাকে গত ১৭ আগস্ট (২০১১) সচিব মোকাম্মেল হকের বাসায় এক ইফতার পার্টিতে সে সময়ের (১৯৭৫ সালে) ডিসি জনাব হাসনাত আব্দুল হাই ১৫ আগস্ট প্রসঙ্গে আমাকে বললেন, "সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে প্রায় ১৫ জন ডিসির সঙ্গে আমাকে প্রেসিডেন্ট মোশতাকের কক্ষে নিয়ে যাওয়া হলো। প্রেসিডেন্ট মোশতাক আমাদের বললেন, 'শেখ মুজিবের ৩২ নম্বরের বাড়িতে ২০ ভরি সোনা পাওয়া গেছে। এগুলো আপনারা অফিসারদের সব জানাবেন। এসব অবৈধ সোনা এবং তাঁর দুর্নীতির প্রমাণ।' মিটিং শেষে আমার সহকর্মীরা সকলে বলাবলি করলেন যে বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে মাত্র ২০ ভরি সোনা পাওয়া গেছে, যখন তাঁর দুই পুত্র শেখ জামাল ও শেখ কামালের বিয়ে হয়েছে মাত্র কয় মাস আগেই। এরপর এই ২০ ভরি সোনার গহনার কথা আমাদের অজস্র অফিসারের কাছে তুলে ধরে বঙ্গবন্ধুর দুর্নীতি প্রমাণের চেষ্টা করা হলে তাদের কাছে ডিসিদের আর কোন মান-সম্মান থাকবে না। আমার সহকর্মীরা প্রায় কোরাশের কণ্ঠে বললেন, খুন-খারাবি করে খুনী মোশতাকের মাথা খারাপ হয়ে গেছে। বঙ্গবন্ধুর চেয়ারে বসার স্বপ্ন সে কি করে দেখে?"
 

ছবি
সেকশনঃ ইতিহাস
লিখেছেনঃ স্বপ্নচারী আসিফ তারিখঃ 16/08/2014
সর্বমোট 5957 বার পঠিত
ফেসবুকের মাধ্যমে কমেন্ট করুণ

সার্চ

সর্বোচ্চ মন্তব্যকৃত

এই তালিকায় একজন লেখকের সর্বোচ্চ ২ টি ও গত ৩ মাসের লেখা দেখানো হয়েছে। সব সময়ের সেরাগুলো দেখার জন্য এখানে ক্লিক করুন

সর্বোচ্চ পঠিত

এই তালিকায় একজন লেখকের সর্বোচ্চ ২ টি ও গত ৩ মাসের লেখা দেখানো হয়েছে। সব সময়ের সেরাগুলো দেখার জন্য এখানে ক্লিক করুন