ব্যাকগ্রাউন্ড

ফেইসবুকে!

সমকামিতা (পর্ব-সাত): সমকামিতার অন্তরালের স্বভাবগত চর্চা

এ পর্বে আমি যা লিখছি তা শুধুমাত্র আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটকে বিবেচনায় নিয়ে। অন্যান্য কোনও দেশের সাথে এটি মিলতেও পারে, নাও মিলতে পারে। সিরিজটির প্রথম থেকেই আমি অন্যান্য দেশের বিষয়গুলিকে সেভাবে তুলে আনিনি, বলতে গেলে একেবারেই অনুপস্থিত রেখেছি। এর কারণ, আমাদের দেশের বিরাজিত বাস্তবতা। আর্থসামাজিক বাস্তবতা এবং এর সাথে সংশ্লিষ্ট জীবনের অন্য সকল চাহিদা একেক দেশের একেক রকম। কোনও দেশ সমকামীদের অধিকার বাস্তবায়নের জন্য গণভোট করছে, কোনও দেশ সমকামী বিবাহ আইনসংগত করছে, কোনও দেশ এটিকে ব্যক্তিস্বাধীনতা ও যৌন-স্বাধীনতা বলে স্বীকৃতি দিচ্ছে, কোনও দেশ আবার আইন করে এটিকে রোধ করতে চাইছে- এরকম বহুবিধ বাস্তবতা বিরাজমান, যার অধিকংশই আমি জানি না।
 
আমার দৃষ্টিতে আমাদের দেশের সমকামিতা বিষয়ক বাস্তবতাকে জাতীয় পর্যায়ে গুরুত্বসহকারে আমলে নেবার মতো প্রেক্ষাপট এখনও তৈরি হয়নি। মানুষের নিত্য প্রয়োজনীয় বিষয়গুলিকে এখনও যেখানে নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি সেখানে এটি নিয়ে ভাববার বিষয়টি এখন পর্যন্ত অনেকটা বিলাসিতার পর্যায়ে পড়ে। ভবিষ্যৎ বাস্তবতা কি হবে তা ভবিষ্যতই বলে দেবে, এখন সে বিষয়ে ধারণা করা কঠিন। হয়ত এটা ঠিক যে, সমকামিতার বিষয়টি নিয়ে একটা কিছু করাও আমাদের দেশের অপ্রকাশিত বা স্বল্প-প্রকাশিত বাস্তবতা। যেটিই হোক না কেন আমার মনে হয় এটি এখন পর্যন্ত আমাদের দেশের জন্য গৌণ বাস্তবতা। নিচ থেকে উপর পর্যন্ত বিরাজিত মুখ্য সমস্যাগুলি আরও জীবন-ঘনিষ্ঠ ও অত্যাবশ্যকীয়। দেশে এতো বড় বড় সমস্যা আছে যে, তার প্রাধিকার বা প্রায়োরিটি করলে সমকামিতা বিষয়ক সমস্যা একেবারেই তলানিতে পড়ে থাকবে। সুতরাং পর্যায়ক্রমিকভাবে এটিকে আমলে নেবার মতো অবস্থা আসা পর্যন্ত ধৈর্য ধারণ করতে হবে।  
 
আলোচনার সহজবোধ্যতার কথা বিবেচনায় রেখে সমকামী চর্চার বিষয়টিকে আমি নিজের মতো করে বিশ্লেষণ করার চেষ্টা করছি।
 
জন্মগত ত্রুটি বা পরিবেশগত কারণে বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আকর্ষণ কম বোধ হওয়া একটি বিষয়। তবে বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আকর্ষণ কম বোধ হওয়া মানেই যে সমলিঙ্গের প্রতি আকর্ষণ বোধ হবে সেটি কিন্তু নিশ্চিত নয়। আবার সমলিঙ্গের প্রতি আকর্ষণ বোধ হলেই সেখানে যৌনসম্পর্ক করতেই হবে- সেটিও কতোটা জরুরি তাও ভাবা দরকার। এখানে আকর্ষণের তীব্রতার পার্থক্য বিবেচনায় রাখা দরকার। স্বাভাবিক একটা মানুষের যেভাবে এ আকর্ষণ অনুভূত হয় জন্মগত ক্রুটি বা পরিবেশগত কারণে একজন সমকামীর মধ্যে তা সেভাবে অনুভূত না হবার সম্ভাবনাই বেশি। সমকামী চর্চা কি নিয়ন্ত্রিত যৌন চর্চা হবে নাকি অনিয়ন্ত্রিত যৌন চর্চা হবে সেটিও বিবেচনায় রাখতে হবে। স্মরণে রাখতে হবে যে, সমাজের স্বাভাবিক যৌন চর্চা কিন্তু নিয়ন্ত্রিত যৌন চর্চা। ফলে সমকামী যৌন চর্চাও নিয়ন্ত্রিত হতে হবে। দুটোর সাথে তুলনা করে নয়, সমাজের বৃহত স্বার্থেই।
 
আইনগত, সামাজিক, পারিবারিক ও ব্যক্তিগত সকল পর্যায়েই কোন না কোনভাবে যৌন চর্চার উপরে একটা দৃশ্য ও অদৃশ্য নিয়ন্ত্রণ আছে। হতে পারে তা আইন দ্বারা সীমাবদ্ধকৃত, সমাজ ও পরিবার দ্বারা আরোপিত অথবা ব্যক্তি পর্যায়ের রুচিগত ব্যাপারের সাথে সম্পর্কযুক্ত। যেভাবেই দেখি না কেন, সার্বিকভাবে এর উপরে একটা সামাজিক মূল্যবোধের শক্ত যোগও আছে।
 
স্বাভাবিকভাবে বেড়ে ওঠা, স্বাভাবিক বুদ্ধিসম্পন্ন দুজন পূর্ণ বয়স্ক বিপরীত লিঙ্গের মানুষ ইচ্ছে করলেই যৌন সম্পর্ক তৈরি করতে পারে এবং তা চর্চা করে পারে। এ জন্যে তাদের স্বামী-স্ত্রী হতে হবে বা কোন আইনসিদ্ধ সম্পর্ক থাকতে হবে এমন কোন কথা নেই। অর্থাৎ পারস্পারিক সম্মতিতে এ ধরণের যৌন সম্পর্ক আইনসিদ্ধ। তারপরেও কি এরকম যৌন চর্চা অনিয়ন্ত্রিতভাবে করা সম্ভব! মোটেও সম্ভব নয়। যে কারণে সম্ভব নয় সেটিই সে সমাজের মূল্যবোধ। সমাজে বেড়ে ওঠা একজন মানুষকে এ মূল্যবোধ ধারণ করতে হয়। মূল্যবোধকে ধারণ না করলে মনুষ্যত্ব প্রশ্নবিদ্ধ হয়। মূল্যবোধকে ধারণ করে না এমন মানুষের সংখ্যা সমাজে বেড়ে গেলে তা সামাজিক বিপর্যয়ের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
 
আগেই আলোচনা করেছি যে, সমকামী পুরুষদের মধ্যে যে মেয়েলী আচরণযুক্ত হয় এবং যৌন-ক্রিয়ার সময়ে পুরোপুরি নারীর ভূমিকা গ্রহণ করে তাকে কথি বলে। কথি তার পুরুষ যৌন-সঙ্গীর লিঙ্গ নিজের পায়ুপথে প্রবেশ করতে দিয়ে, পুরুষ সঙ্গীটিকে তার ইচ্ছেমত যৌনক্রিয়ায় সহযোগিতা করে চরম যৌনপুলক পেতে সম্পূর্ণ মেয়েলী ভূমিকা পালন করে এবং এর মাধ্যমে নিজেও যৌনতৃপ্তি লাভ করে। পুরুষ যৌন-সঙ্গীর যৌনতৃপ্তির জন্য সে তার লিঙ্গ মুখে নিয়ে ওরাল-সেক্স করতেও সহযোগিতা করে। নিজের দুই উরুর মাঝে লিঙ্গকে সঞ্চালনা করতে দিয়ে বীর্যপাতের মাধ্যমে চরমপুলক পেতেও পুরুষ সঙ্গীকে সহযোগিতা করে এবং নিজেও তৃপ্ত হয়। অর্থাৎ সকলপ্রকার পেনিট্রেটিভ ও নন-পেনিট্রেটিভ সেক্স-এর সময়েই সে নারীর ভূমিকায় থাকে। কথির বেশভূষা, সাজসজ্জা, ব্যবহার, আচরণ, চলা-ফেরা সবই মেয়েলী। সমাজে তারা নিজেদেরকে মেয়ে বলে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করে। এরা পুরুষকে আকর্ষণ করার সমস্ত কলাকৌশল রপ্ত করে এবং প্রয়োজনে তা ব্যবহার করে।
 
উপরের অনুচ্ছেদ থেকে ক্রিটিক্যাল এনালাইসিস করলে যে বিষয়টি বেরিয়ে আসে তা হলো- পায়ুপথ কোন যৌনাঙ্গ নয়। যে স্নায়ুবিক অনুভূতির কারণে যৌন অনুভূতি হয়, তেমন কোন স্নায়ু বা তন্ত্রই পায়ুপথে নেই। সুতরাং নারীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে একজন কোথি যে যৌন অনুভূতি প্রকাশ করে তা লোক দেখানো কোনভাবেই অনুভূত যৌন প্রকাশ নয়। এটি আর্টিফিসিয়াল। হতে পারে এটি তার মানসিক বিকৃতি থেকে। ফলে তার চিকিৎসা দরকার। মানসিক বৈকল্যের কারণে  যে বিকৃত যৌন চর্চা সেটিকে অধিকার হিসেবে প্রতিষ্ঠার কোন কারণ আছে বলে মনে হয় না।  
 
সমকামী পুরুষের মধ্যে যৌন-ক্রিয়ার সময়ে যে পুরুষের ভূমিকা গ্রহণ করে এবং কথিকে নারীর ভূমিকায় রেখে যৌনক্রিয়া করে তাকে পান্থি বলে। এখানে কথি বলে সম্বোধিত পুরুষটি পায়ুপথে লিঙ্গ সঞ্চালন করে পেনিট্রেটিভ ফ্রিকশনের মাধ্যমে বীর্যপাত ঘটিয়ে যৌনতৃপ্তি পাচ্ছে। এখানে পায়ু কিন্তু মূল বিষয় নয়, পেনিট্রেশন এবং ফ্রিকশন হচ্ছে মূল বিষয়। সেটি হতে পারে অন্য যে কোনভাবে যেমন- স্ব হস্ত পরিচালনার মাধ্যমে, বালিশে গুঁতিয়ে, গরু-ছাগল-ভেড়া-মোষ ইত্যাদির পায়ু পথে বা যৌনদ্বারে ঢুকিয়ে বা আরও সহস্র প্রকারে। পায়ুপথ কোন যৌনাঙ্গ নয় ফলে এর প্রতি বিশেষ আকর্ষণ থাকাটাও স্বাভাবিক নয়। যৌনসঙ্গীকে তৃপ্ত করার বিষয়টিও এখানে অনুপস্থিত কারণ যৌনসঙ্গীর পায়ুপথ যৌনসঙ্গীকে যৌন অনুভূতি দিতে অক্ষম। ফলে বীর্যপাত করে যৌন উত্তেজনা প্রশমন করাটাই এখানে মুখ্য। মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে পায়ুপথকে। পায়ুপথ তুলনামূলকভাবে সহজলভ্য এবং এর সাথে অর্থকড়িসগ আরও কিছু বিষয় জড়িত বলে এ চর্চা চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে। উত্থিত লিঙ্গ পেনিট্রেশন করার মাধ্যমের যেহেতু অভাব নাই সেহেতু মল ধারণকরা এই পায়ু মাধ্যমকে যৌন অধিকারের আওতায় আনার কোন শক্ত ভিত দেখি না। বহু মাধ্যম আছে যা ব্যবহার করলে আইনের বালাইয়ের প্রশ্নও আসবে না, সেগুলি ব্যবহার করলেই হয়।
 
পান্থিরা সমাজে আর দশজন পুরুষের মতো বসবাস করে এবং পুরুষ পরিচয় দিয়ে স্বাভাবিক জীবন-যাপন করে। তারা তাদের পান্থি পরিচয় গোপন করে স্বাভাবিক পুরুষ হিসেবে থাকতেই গর্ববোধ করে, পান্থি পরিচয় প্রকাশ না করে তা গোপন করে যায়। তার মানে সে সমাজের মূল্যবোধকে নিয়ে খেলছে। নিজেকে প্রকাশ না করা মানে সে জানে যে সে ঠিক কাজ করছে না। আবার একই সাথে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে যাকে পায় তার সাথে যৌনতা করে সেই মূল্যবোধকেই নষ্ট করছে। যেখানে যেভাবে সুযোগ পাচ্ছে সেখানে সেভাবে যৌনতার সুযোগ নিচ্ছে। নারী-পুরুষ বলে কোন কথা নেই- যখন যা পাচ্ছে তখন সেই সুযোগ নিচ্ছে। ঘরে স্ত্রী-পুত্র-কন্যা রেখেও সুযোগ পেলে অন্যত্র পায়ুপথে সঙ্গম করে বেড়াচ্ছে। সমকামীদের যৌন অধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে এগুলিকে প্রয়োগ করার কোন কারণ আছে বলে মনে হয় না। তারচেয়ে চিকিৎসা, সেক্সুয়াল কাউন্সেলিং, সেক্সুয়াল অরিয়েন্টেশন এবং মূল্যবোধের গুরুত্ব বোঝান বেশি জরুরি বলেই মনে হয়।  
 
সমকামী পুরুষদের মধ্যে মেয়েলী আচরণযুক্ত এবং যৌন-ক্রিয়ার সময়ে পুরোপুরি নারীর ভূমিকা গ্রহণকারী যে কথি তার যৌনসঙ্গী পুরুষ প্রেমিককে বলা হয় পারিখ। তারমানে পারিখ হচ্ছে একজন পান্থি। অর্থাৎ একজন কথি বা নারীর ভূমিকায় থাকা সমকামী যাদের সাথে যৌনক্রিয়া করে তাদের মধ্যে যে কোন একজনের সাথে তাদের ভালবাসার সম্পর্ক গড়ে গঠে, যার সাথে ভালবাসার সম্পর্ক জন্মে তাকে বলে পারিখ। যৌন-ক্রিয়ার বিবেচনায় সকল পারিখই আসলে পান্থি তবে সকল পান্থি পারিখ নয়, কারণ যে পান্থি বা পুরুষের ভূমিকায় থাকা ব্যক্তির সাথে কোন কথি বা নারীর ভূমিকায় থাকা যৌন-সঙ্গীর ভালবাসার সম্পর্ক জন্মায় না সে পারিখ হতে পারে না।
 
সহজেই বোঝা যাচ্ছে কোথি, পান্তি বা পারিখ যা-ই বলি না কেন সবাই বহুগামী চর্চায় অভ্যস্ত। মানুষ বিশেষ করে পুরুষ মানুষ সৃষ্টিগতভাবেই বহুগামী। সৃষ্টিগতভাবে বহুগামী হওয়া এবং তার চর্চা করা দুটির মধ্যে পার্থক্য আছে। আবার বহুগামিতার চর্চা করা আবার সে চর্চাকে অধিকার হিসেবে প্রতিষ্ঠার মধ্যেও পার্থক্য আছে। সমকামীদের অধিকার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে আসলে কি করতে যাচ্ছি সে প্রশ্নটি খতিয়ে দেখার দরকার আছে বৈকি। এটিকে অবাধ চর্চা করার কোন সুযোগই নাই, নিয়ন্ত্রণ থাকতেই হবে। আর যদি নিয়ন্ত্রণ রাখতেই হয় তবে কেন স্বাভাবিক যৌন সম্পর্ককে প্রমোট করার নিয়ন্ত্রণকে প্রমোট করা হবে না? একজন পারিখ শুধু যে সমকামী হয় তা নয়, সে উভকামীও হতে পারে, হয়ও। ব্যক্তি জীবনে বিবাহিতও হতে পারে, ঘর-সংসার, বাচ্চা-কাচ্চা থাকে এবং সমকামের প্রতি ঝোঁক থাকে। এটিকে কোনভাবেই কি অধিকার হিসেবে প্রতিষ্ঠার সুযোগ থাকা উচিৎ? যদি থাকেই তবে ঘুরে ফিরে একই কথা বলতে হয়- নিয়ন্ত্রণ যদি রাখতেই হয় তবে স্বাভাবিক যৌন সম্পর্ককে প্রমোট করার জন্যই রাখা উচিৎ।
 
যে সকল সমকামী পুরুষ পান্থি হিসেবে পুরুষের ভূমিকায় পেনিট্রেটিভ যৌনক্রিয়া করে আবার কথি বা নারীর ভূমিকায় নেমে অন্য পান্থির এমনকি কথির থেকে রিসেভটিভ যৌনক্রিয়ায়ও সক্রিয় অংশগ্রহণ করে তাদেরকে বলা হয় দো-পারাটা।  আগেই বলেছি, পায়ু কোন যৌনাঙ্গ নয় ফলে এর প্রতি আকর্ষণ বোধ হওয়া অস্বাভাবিক, এটি চিন্তা বিকৃতি যা পরিবেশ থেকে প্রাপ্ত সেক্সুয়াল অরিয়েন্টেশনের ঘাটতি। এটি যৌন বিকৃতি। অন্যের পায়ুপথে লিঙ্গ সঞ্চালনে  করে  বীর্যপাতের আনন্দটুকু পাবার জন্যে অনেক সময়ে নিজের পায়ুপথকেও অন্যকে ব্যবহার করতে দিতে হয়- এটি তাই। পায়ু মারতে পায়ু দিলাম, লিঙ্গ দিতে লিঙ্গ নিলাম, সুযোগ পেলে যোনী সঙ্গম করলাম, যোনী ভোগ করেও পায়ুর লোভ ছাড়তে পারলাম না- এ কোন সেক্সুয়াল অরিয়েন্টেশন, এ কোন যৌন চর্চা, এ কোন অধিকার চর্চা! গে রা সবাই হোমোসেক্সুয়াল পুরুষ, এরা পায়ুপথে যৌনসংগম করে। এরা মূলত পন্থি ও দো-পারাটা। এদের ক্ষেত্রেও এই একই কথা প্রযোজ্য।
 
যে সকল সমকামী পুরুষ পুরুষের সাথে সমকামী যৌনক্রিয়া করে এবং একই সাথে নারীর সাথেও সমভাবে যৌনক্রিয়া করে এবং উভয় ক্ষেত্রেই যৌনতৃপ্তি লাভ করে তাদেরকে বলে বাই-সেক্সুয়াল। এটি কারও না কারও চর্চা হতে পারে- অধিকার হয় কি করে! স্বল্প কিছু মানুষের অস্বাভাবিক যৌন চর্চা আর তাকে অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া এক কথা নয়। এর সামাজিক ইমপাক্ট ভাল না। একজনের বেশি যৌনসঙ্গী থাকাকে অধিকার হিসেবে প্রতিষ্ঠার কোন সুযোগ থাকা উচিৎ বলে মনে হয় না। তাও আবার নারী-পুরুষ দু’ধরণের সঙ্গী। এদেরও সেক্সুয়াল অরিয়েন্টেশন দেওয়া উচিৎ এবং এমন চর্চার উপরে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করা উচিৎ।
 
সমকামী নারীদেরকে লেসবিয়ান বলা হয়। সাধারণত এরা যৌন ক্রিয়ার সময়ে একজন পুরুষের ভূমিকা নেয়, অন্যজন নারীর ভূমিকায় থাকে। লেসবিয়ান যৌন-ক্রিযারও নানান রূপ আছে। কোনও কোনও ক্ষেত্রে এরা পালাক্রমে নারী ও পুরুষের ভূমিকায় থাকে আবার কোনও কোনও ক্ষেত্রে এদের মধ্যে যে পুরুষের ভূমিকায় থাকে সে সর্বদাই পুরুষের ভূমিকায় থাকে এবং যে নারীর ভূমিকায় থাকে সে সর্বদাই নারীর ভূমিকায় থাকে। আবার দুজনেই পুরুষের ভূমিকা বা দুজনেই নারীর ভূমিকায় থেকেও যৌনক্রিয়া করে এবং তৃপ্তি পায়। মূলত এরা নারী-পুরুষ যৌথ ভূমিকায় অবতীর্ণ থাকে। তার মানে হচ্ছে- যৌন তৃপ্তি পাবার জন্য এরা আসলে পুরুষকেই কামনা করে- অন্য কোন অসুবিধা বা বিরাগভাজনতার কারণে লেসবিয়ান চর্চা করে। ফলে সেক্সুয়াল অরিয়েন্টেশন, কাউন্সেলিং এবং যে ফ্যাক্টরের কারণে এরা এই চর্চা করে সেই ফ্যাক্টরকে তুলে দিতে পারলে এবং পরিবেশ নিশ্চিত করলে এ চর্চাটিও কমে আসতে বাধ্য। সুতরাং অধিকার প্রতিষ্ঠার চেয়ে জরুরি অন্য কিছু যা স্বাভাবিক যৌন চর্চাকে প্রমোট করে।
 
যেভাবে মনে হল, সেভাবে যৌন চর্চা করে ফেললাম এবং বাঁধা দিলে সেটিকে অধিকার প্রতিষ্ঠার নাম দিয়ে আন্দোলনে নেমে পড়লাম। আইন, বিচার, মূল্যবোধ কোন কিছুরই কোন মূল্যয়ন করলাম না। এটি তো কোন স্বাভাবিক কথা হতে পারে না। সবচেয়ে বড় কথা এগুলির চিকিৎসা আছে, এগুলি পরিবেশগত বিষয়, বেড়ে ওঠার চর্চা, সেক্সুয়াল অরিয়েন্টেশন, কাউন্সেলিং এগুলির প্রভাবে প্রভাবিত হয়। ফলে কেন দিতে যাবো অধিকার! বরং এদের সুস্থতা নিশ্চিত করার ব্যবস্থা করা যেতে পারে। সবকিছুর পরেও যদি সামান্য কিছু মানুষ ভাল না হয়ে ঐ মানসিকতা ও চর্চায় থেকেও যায় তবে তার বিষয়ে শক্ত হওয়া চলে। সারা সমাজকে ব্যতিক্রমের অধিকার দিয়ে পুরো সমাজকে নষ্ট করা চলে না। বৃহৎ সমাজকে ভাল রাখতে গিয়ে যে চর্চাগুলি করা হয় সেখানে দুষ্টের শাসনেরই ব্যবস্থা থাকে। আইন বিচার, মূল্যবোধ সব বৃহত জনগোষ্ঠীকে ভাল রাখার বিবেচনার উপরেই প্রতিষ্ঠিত হয়। সবার সব অধিকার দিতে গেলে সমাজ-সংসার বলে আর কিছু থাকে না।
 
আইন ও সামাজিক মূল্যবোধের কারণেই অনেক যৌন সম্পর্ক তৈরিই হয় না। আস্তে আস্তে যদি সে মূল্যবোধগুলি একের পর এক অধিকারের নামে ভাঙতে থাকে তবে কোন এক সময়ে মা-মেয়ে, মা-ছেলে, বাবা-ছেলে, বাবা-মেয়ে, ভাই-ভাই, ভাই-বোন, বোন-বোন, চাচা-ভাতিজা, মামা-ভাগ্নি ইত্যাদি বহু রকমের সম্পর্কই অধিকারের আওতায় আসবে। এরকম সম্পর্কের দুজন যদি একসাথে মিলতে চায় তবে কেন সে অধিকার দেওয়া হবে না। ধর্ম ছাড়া আর কোথাও কিন্তু এর জন্য কোন আইনগত বাধাও নেই। বিয়ে করতে বাধা আছে, যৌন সম্পর্ক করতে বাধা নেই। এমন যৌন সম্পর্কগুলি সামাজিক মূল্যবোধের কারণেই হয় না। একেবারেই যে হয় না তাও ঠিক নয়। এমন কঠিন সামাজিক মূল্যবোধের মধ্যেও এরকম রুচিহীন সম্পর্কও কোথাও না কোথাও হচ্ছে। যে মূল্যবোধকে ধারণ করার কারণে নিকট সম্পর্কের তারও সাথে যৌন সম্পর্ক স্থাপিত হচ্ছে না, সমকামিতার ক্ষেত্রে সমাজের সেই মূল্যবোধকে ধারণ করা গেলে এটিও হবে না। ফলে যারা সমকামিতার অধিকারে নেমেছে বা তাদের সমর্থন করছে তাদের এ  মূল্যবোধের যায়গাটি আরও সুদৃঢ় হওয়াটাই কাম্য।
 
পৃথিবীতে বহু কিছু করার আছে। না খেয়ে বিনা চিকিৎসায় মানুষ মারা যাচ্ছে, অর্থের অভাবে শিক্ষার সুযোগ পাচ্ছে না বহু শিশু- এরকম কোটি কোটি সমস্যা নিয়ে চলছে দেশ ও পৃথিবী। সেখানে কাজ করার আছে। নিজেকে ভাল কাজে ব্যস্ত রাখলে অনেক বাজে চিন্তা থেকে দূরে থাকা যায়। সবকিছু বাদ দিয়ে নিজের বিকৃত যৌনচর্চাকে অধিকার হিসেবে প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে নেমেপড়া একটা চরম স্বার্থপরতা। একটা চরম সেলফিস ব্যাপার। রোম পুড়ে যাচ্ছে, নিরো বাঁশি বাজাচ্ছে অবস্থার মতো। এর মধ্যে কোন উদারতা নাই, আছে ক্ষুদ্রতা। দুনিয়া শেষ হয়ে যাচ্ছে সেদিকে কোন নজর না দিয়ে নিজেদের বিকৃত যৌনতাকে প্রতিষ্ঠার আন্দোলন নিয়ে ব্যস্ত থাকা কোন উদারতার পরিচয় বহন করে না।
 
চলবে…
 

এই সিরিজ এর সব লেখা
ছবি
সেকশনঃ সাধারণ পোস্ট
লিখেছেনঃ যুক্তিযুক্ত তারিখঃ 17/06/2015
সর্বমোট 16750 বার পঠিত
ফেসবুকের মাধ্যমে কমেন্ট করুণ

সার্চ

সর্বোচ্চ মন্তব্যকৃত

এই তালিকায় একজন লেখকের সর্বোচ্চ ২ টি ও গত ৩ মাসের লেখা দেখানো হয়েছে। সব সময়ের সেরাগুলো দেখার জন্য এখানে ক্লিক করুন

সর্বোচ্চ পঠিত

এই তালিকায় একজন লেখকের সর্বোচ্চ ২ টি ও গত ৩ মাসের লেখা দেখানো হয়েছে। সব সময়ের সেরাগুলো দেখার জন্য এখানে ক্লিক করুন